স্বাস্থ্য সহকারীর ফার্মেসিতে সরকারি ওষুধ বিক্রি হচ্ছে

স্বাস্থ্য সহকারীর ফার্মেসিতে সরকারি ওষুধ বিক্রি হচ্ছে,ওষুধের গায়ে লেখা ‘সরকারি সম্পদ বিক্রি করা দণ্ডনীয় অপরাধ’। এরপরও রমরমা ব্যবসা চলছে বিক্রি নিষিদ্ধ এসব ওষুধের। খোদ সরকারি হাসপাতালের অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমে জনসাধারণের জন্য সরকারি বরাদ্দের সিংহভাগ ওষুধই চলে যাচ্ছে খোলাবাজারে। যা উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে ফার্মেসিগুলোতে। আর সেগুলো কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ।

 

স্বাস্থ্য সহকারীর ফার্মেসিতে সরকারি ওষুধ বিক্রি হচ্ছে

 

স্বাস্থ্য সহকারীর ফার্মেসিতে সরকারি ওষুধ বিক্রি হচ্ছে

সম্প্রতি বগুড়ার শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী মায়া খাতুন ও তার স্বামী আবু বকর সিদ্দিক তাদের মালিকানাধীন জালাল ফার্মেসিতে হাসপাতালের সরকারি ওষুধ বিক্রিকালে হাতেনাতে ধরা পড়েন। মূলত এরপরই সরকারি ওষুধ বিক্রির রমরমা বাণিজ্যের বিষয়টি জানাজানি হয়। চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় শহরজুড়ে। পাশাপাশি বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট চক্রের নানা অজানা কাহিনী।

সরকারি হাসপাতালের ওষুধ বিক্রির ঘটনায় ভুক্তভোগীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। চক্রটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সোমবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে বগুড়া জেলা সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে। উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের আট নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শাকিব হোসেন এই অভিযোগটি করেন।

মায়া খাতুন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকরির পাশাপাশি বাগুড়া হঠাৎপাড়া বাজারে একটি ওষুধের ফার্মেসি পরিচালনা করে আসছেন। তবে ওই ফার্মেসিতে সার্বক্ষণিক থাকেন তার স্বামী আবু বকর সিদ্দিক। তিনি ওষুধ কেনাবেচা করে থাকেন।

অভিযোগ উঠেছে ওই ফার্মেসি থেকে প্রতিদিনই হাসপাতালের সরকারি ওষুধ বিক্রি করা হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ২৪ মার্চ একই গ্রামের নুরু হকের স্ত্রী সাজেদা বেগম ওষুধ কেনার জন্য চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রসহ ওই ফার্মেসিতে যান। সেখান থেকে কিছু ওষুধ কিনে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। কিন্তু দাম বেশি

মনে হওয়ায় প্রতিবেশী লোকজনকে ওষুধগুলো দেখান। এ সময় তার কেনা ওষুধগুলোর মধ্যে বেশকিছু বিক্রি নিষিদ্ধ সরকারি হাসপাতালে সরবরাহ করা ওষুধ পাওয়া যায়। পরে ঘটনাটি জানিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য শাকিব হোসেনের কাছে সরকারি ওষুধগুলো জমা দেওয়া হয়।

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

ভুক্তভোগী সাজেদা বেগম বলেন, ফার্মেসি মালিক প্রত্যেকটি ট্যাবলেট-ক্যাপসুল পঞ্চাশ টাকা হিসাবে টাকা নিয়েছেন। আমি লেখাপড়া না জানা মানুষ। তাই কোনটি সরকারি আর কোনটি কোম্পানির এতকিছু বুঝি না। তবে বিনামূল্যের সরকারি ওষুধ তাকে দিয়ে টাকা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

ওই ওয়ার্ডের মেম্বার শাকিব হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সরকারি হাসপাতালে সরবরাহ করা সেফিক্সিম-৪০০ সহ বেশকিছু ওষুধ ওই ফার্মেসিতে কেনাবেচার সময় হাতেনাতে আটক করে স্থানীয় লোকজন। পরে ঘটনাটি জানতে চাইলে ওই ফার্মেসির লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এমনকি আমাকে বলেন, সরকারি ওষুধ আমরা বিক্রি করবো, তাতে তোমাদের কী, পারলে ঠেকাও।

এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারী মায়া খাতুন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে তার স্বামী আবু বকর সিদ্দিক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের ফার্মেসিতে কোনো সরকারি ওষুধ বিক্রি হয় না। সামাজিক দ্বন্দ্বের জেরে তাদের বিরুদ্ধে এই ধরনের মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে।

 

স্বাস্থ্য সহকারীর ফার্মেসিতে সরকারি ওষুধ বিক্রি হচ্ছে

 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজিদ হাসান লিংকন অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করা হবে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন:

১ thought on “স্বাস্থ্য সহকারীর ফার্মেসিতে সরকারি ওষুধ বিক্রি হচ্ছে”

Leave a Comment